১. দাগের উপর বা দাগে আঙ্গুল রেখে দাগের পিছনে দাঁড়ানো। এতে কাতার কখনো সোজা হয় না। নিয়ম হল দাগে গোড়ালী রেখে দাঁড়ানো।
২. কাতার ইমামের ডানে বাড়িয়ে ফেলা। (ফাতাওয়ায়ে আলমগিরী: ১/৮৭)
৩. সামনের কাতারে খালী জায়গা রেখে পিছনের কাতারে বসে থাকা বা দাঁড়ানো। (রদ্দুর মুহতার: ১/৮৭)
৪. জামা‘আত শুরু হওয়ার পর কাতারে দাঁড়িয়ে সুন্নাত পড়া। (মাসায়িলে নামায: ৮৭)
৫. ইকামাত চলাকালীন সময়ে দুহাত বেঁধে রাখা, ইকামাতের জওয়াব না দেয়া। (ফাতাওয়ায়ে রহীমিয়া:৩/১৪)
৬. তাকবীরে তাহরীমার সময় মাথা ঝুঁকানো। (তিরমিযী শরীফ, হাদিস নং ৩০৪, মুস্তাদরাক, হা: নং ১৭৬১)
৭. শীতের সময় হাত চাদরের ভেতর রেখেই তাকবীরে তাহরীমার জন্য হাত উঠানো। (রদ্দুল মুহতার:১/৪৭৮)
৮. তাকবীরে তাহরীমার সময় হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলী কানের লতি পর্যন্ত না উঠানো এবং হাতের তালু কিবলামুখী করে না রাখা। (মুসলিম শরীফ, হা: নং ৩৯১)
৯. আরবী নিয়্যাতকে বা নিয়্যাত মুখে বলাকে জরুরী মনে করা। (ফাতহুল বারী: ১/১৬)
১০. ইমামের তাকবীরে তাহরীমা শেষ হওয়ার আগেই মুক্তাদীর তাকবীর শেষ করে দেয়া এতে ইকতিদা সহীহ হয় না। (মুসলিম শরীফ, হা: নং ৪১৪,৪১৫, বুখারী শরীফ, হা: নং ৭৩৪)
১১. দাঁড়ানো অবস্থায় উভয় পায়ের আঙ্গুলসমূহ কিবলামুখী না করে ডানে বামে করে রাখা। (নাসায়ী শরীফ, হা: নং-৮৯২)
১২. দাঁড়ানো অবস্থায় মাথা ঝুঁকিয়ে রাখা। (তিরমিযী শরীফ হা: নং৩০৪)
১৩. পুরুষের বুকের উপর বা নাভি পেঁচিয়ে হাত বাঁধা। (আবু দাউদ, হা: নং ৭৫৬, ফাতাওয়ায়ে আলমগিরী:১/৭৩)
১৪. আস্তে কিরা‘আত পড়ার সময় মদ, গুন্নাহ, ইত্যাদির প্রতি লক্ষ্য না করা।
১৫. মাসনূন কিরা‘আতের প্রতি লক্ষ্য না রাখা। যেমন ফজর ও যুহরে লম্বা কিরা‘আত পড়া সুন্নাত যা সাধারণতঃ: পড়াই হয় না। মাগরিবে সংক্ষিপ্ত কিরা‘আত পড়া সুন্নাত সেখানে অনেকে লম্বা কিরা‘আত পড়ে থাকে এবং ’ইশাতে মধ্যম কিরা‘আত পড়া সুন্নাত সেখানে মাগরিবের ন্যায় ছোট সূরা পড়া এ সবই সুন্নাতের খেলাফ। (মুসলিম শরীফ, হা: নং ৭৩৩)
১৬. রুকু অবস্থায় মাথা পিঠ এবং কোমর বরাবর করে না রাখা বরং হাঁটু বাঁকা করে রাখা। (মুসলিম শরীফ, হা: নং-৪৯৮, বুখারী শরীফ, হা: নং-৮৬৩)
১৭. রুকু অবস্থায় হাতের আঙ্গুলসমূহ মিলিয়ে রাখা। কনুই বাঁকা করে রাখা এবং তাড়াহুড়া করা। (আবু দাউদ হা: নং-৭৩১,৭৩৪)
১৮. রুকু থেকে উঠার পর সোজা স্থির হয়ে না দাঁড়িয়েই তাড়া হুড়া করে সিজদায় চলে যাওয়া। (বুখারী শরীফ হা: নং-৮০০,৮০১,৮০২)
১৯. সিজদায় যাওয়ার সময় বিনা উযরে বুক বা মাথা ঝুঁকিয়ে সিজদায় যাওয়া। (আবু দাউদ হা: নং-৮৩৮, রদ্দুল:১/৪৬৪)
২০. সিজদায় দু’হাতের আঙ্গুলসমূহ ছড়িয়ে রাখা এবং কান বরাবর না রাখা। (মুসনাদে আহমাদ, হা: নং-১৮৮৮২, সহীহ ইবনে খুযাইমা, হাদীস নং-৬৪৩)
২১. সিজদার সময় উভয় পায়ের মাঝে দাঁড়ানোর ন্যায় চার আঙ্গুল ফাঁক না রাখা বা গোড়ালী মিলিয়ে রাখা। পায়ের আঙ্গুলী কিবলামুখী করে না রাখা এবং পা যমীন থেকে উঁচু করে রাখা।
২২. দুই সিজদার মাঝে সোজা হয়ে না বসা। (আবূ দাউদ, হা: নং ৮৫৬,৮৫৭,৮৫৮)
২৩. সিজদা থেকে উঠার সময় বিনা উযরে যমীনে টেক লাগানো। সিনা ও মাথা ঝুঁকিয়ে রাখা।
২৪. উভয় সালাম ফিরানোর সময় কারো নিয়্যাত না করা। (মুসলিম শরিফ, হা: নং-৪৩১, মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক, হা: নং-৩১৪০,৩১৪৯,৩১৫২)
২৫. মুনাজাতের সময় হাতের তালু আসমানের দিকে না রাখা। (তাবারানী কাবীর, হাদীস নং ৩১৪২)
২৬. মুনাজাতের সময় হাত একেবারে মিলিয়ে রাখা অথবা অনেক ফাঁক করে রাখা কিংবা হাত দ্বারা দড়ি পাকানোর মত করতে থাকা। বা হাত নমস্কারের মত করে রাখা। (হিসনে হাসীন, ত্বাহাবী ২০৫, সূরা আ’রাফ, আয়াত নং ৫৫)
২৭. আল্লাহুম্মা আমীন বলে দূ’আ শুরু করা। (তিরমিযী শরীফ হাদীস নং ৩৪৭৬)
২৮. কালিমায়ে তায়্যিবা বা বাহক্বে লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু বলে মুনাজাত শেষ করা। (তাবরানী কাবীর,হাদীস নং ৫১২৪, মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক, হাদীস নং ৩১১৭, আবূ দাউদ হাদীস নং ৯৩৮)
আল্লাহ পাক আমাদের সহিহ-শুদ্ধভাবে নামায আদায়ের তাওফীক দান করুন । আমীন !
লেখক : মোস্তফা কবীর সিদ্দিকী
লেখক, গবেষক, প্রাবন্ধিক